টিডিএন প্রতিবেদন:কারিগরি শিক্ষার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ও প্রচারণাসহ শিক্ষার্থীদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশের লক্ষ্যে আজ শনিবার ৬ এপ্রিল নগরী কাজীর দেউরির একটি কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক স্কিলস ও ইনোভেশন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন অ্যাকসেলারেটিং অ্যানড স্ট্রেনদেনিং স্কিলস ফর ইকনোমিক ট্রান্সফরমেশন (ASSET) প্রকল্পের আওতায় এই প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করা হয়।
এতে শিক্ষা মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।এ সময় মন্ত্রী বলেন,বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে, কারিগরি এবং দক্ষতা উন্নয়ন শিক্ষা জাতীয় উন্নয়নের অপরিহার্য অঙ্গ। এই সময়ে, দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে গেলে যুবসমাজকে কারিগরি জ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতায় পারদর্শী করে তুলতে হবে। স্কিলস ও ইনোভেশন কম্পিটিশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধা, দক্ষতা এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতা উন্নয়নের এই প্রক্রিয়াটি গতিশীল হবে বলে আমি বিশ্বাস করি এবং এর মাধ্যমে তারা জাতীয় উন্নয়নে আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নজরুল ইসলাম চৌধুরী, এম.পি, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ সিরাজুল ইসলাম, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আজিজ তাহের খান এবং অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার,জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার পাশা ও এডিসি (রাজস্ব), চট্টগ্রাম মোঃ আব্দুল মালেক উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), অ্যাসেট প্রকল্প।
অ্যাসেট প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের ও আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে দেশের যুব, শ্রমিক, নারী, প্রতিবন্ধী, অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দেশের বেকারত্ব হ্রাস করে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা।
উল্লেখ্য, একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং রূপকল্প ২০৪১ অর্জনে দেশের বিশাল জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। এ লক্ষ্য অর্জনে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধি ও জীবনভিত্তিক শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। দক্ষতা বৃদ্ধির অন্যতম হাতিয়ার কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা। এ শিক্ষার প্রসারে বিগত বছরগুলোতে কারিগরি শিক্ষাবিষয়ক ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি কার্যক্রম ছিল স্কিলস কম্পিটিশন। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় ভর্তির হার ৩০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে অ্যাকসেলারেটিং অ্যানড স্ট্রেনদেনিং স্কিলস ফর ইকনমিক ট্রান্সফরমেশন (ASSET) প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। কারিগরি শিক্ষার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ও প্রচারণার অংশ হিসেবে কারিগরি শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা (Skills Competition) আয়োজিত হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় কারিগরি শিক্ষাঙ্গনের ১২০টি সরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কিলস ও ইনোভেশন কম্পিটিশন ২০২৩ এর প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতা একযোগে সারাদেশে গত ১৭ জুন ২০২৩ খ্রি. অনুষ্ঠিত হয়। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে প্রায় ১৮৫০টি উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শিত হয় এবং ৩৬০ টি প্রকল্প আঞ্চলিক পর্বে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়। ইতোমধ্যে সিলেট, খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুরের আঞ্চলিক পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। অ্যাসেট প্রকল্পের কার্যক্রম জুলাই, ২০২১ খ্রি. হতে ডিসেম্বর, ২০২৬ খ্রি. মেয়াদে চলমান।